নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: দেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে রক্ষা করে বনভূমি। তবে নির্বিচারে বনভূমি উজাড়ের ফলে এখন পরিবেশ ও জনজীবন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বনভূমি উজাড় হওয়ায় জীববৈচিত্র্য ধ্বংসসহ পরিবেশের ভারসাম্যহীনতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাড়ছে। বন উজাড়, অপরিকল্পিত বসবাসসহ নানা কারণে বন্যপ্রাণীর সঙ্গে হুমকিতে রয়েছে উদ্ভিদও।
সম্প্রতি টিআইবির গবেষণায় বলা হয়, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাবে বাংলাদেশে বার্ষিক বন উজাড় হওয়ার হার বৈশ্বিক গড়ের প্রায় দ্বিগুণ, ২.৬ শতাংশ। গত দুই দশকে বাংলাদেশে প্রায় ৬৬ বর্গকিলোমিটার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় রেইন ফরেস্ট ধ্বংস করা হয়েছে। আর বন বিভাগের হিসেবে সারাদেশে দখল হয়ে গেছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৪৫৩ একর বনভূমি।
নির্বিচারে বন উজাড়, অপরিকল্পিত বসবাস, স্থাপনা নির্মাণসহ নানা কারণে চট্টগ্রাম শহরে ১৩ প্রজাতির উদ্ভিদ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এখনই সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে নিকট ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হতে পারে আরও ৫০ প্রজাতির উদ্ভিদ। উন্নয়ন সংস্থা- ইফেক্টিভ ক্রিয়েশন অন হিউম্যান ওপেইনিয়নের (ইকো) উদ্যোগে পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।
১ বছর ধরে পরিচালিত এই গবেষণায় বন্দরনগরী চট্টগ্রামের ২০টি এলাকায় ৬৪৫ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া গেছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। এরমধ্যে ১৭৬ প্রজাতি বড় বৃক্ষ, ১০২ প্রজাতি গুল্ম জাতীয়, ২৯৩ প্রজাতি বীরৎ জাতীয়, ৫৯ প্রজাতি লতা জাতীয়, ১৫ প্রজাতি পরাশ্রয়ী। শুধু চট্টগ্রামের ফুসফুস হিসেবে পরিচিত সিআরবিতেই পাওয়া গেছে ২২৩ প্রজাতির উদ্ভিদ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন, বনভূমি এবং বনজসম্পদ সংরক্ষণে আইন প্রয়োগে যেমন বিবিধ চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তেমনি আইনগুলোর কার্যকর প্রয়োগে বন অধিদপ্তরের সদিচ্ছার ঘাটতি রয়েছে। এসব কারণে দেশের বনভূমি নির্বিচারে উজাড় করা হচ্ছে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে পরিবেশে। ধ্বংসের মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। বাড়ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব।
এমন বাস্তবতায় ২২মে সোমবার বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হবে বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস-২০২৩। জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতেই জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি ২২ মে দিনটি বিশ্ব জীববৈচিত্র্য দিবস হিসেবে উদযাপন করে আসছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘ফ্রম এগ্রিমেন্ট টু অ্যাকশন: বিল্ড ব্যাক বায়োডাইভার্সিটি।’
পাঠকের মতামত: